প্রশ্ন: চিনি এবং খাবার লবণ দ্বারা খাদ্য সংরক্ষণের কৌশল ব্যাখ্যা করো
চিনি ও লবণ: চিনি ও লবণ উভয়ই অণুজীবের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। খাদ্য সংরক্ষণে 15% এর উপরে NaCl ব্যবহার করা হয় । NaCl দ্বারা খাদ্য সংরক্ষণ করাকে কিউরিং বলে। চিনির ঘনত্ব যত বেশি হবে (সাধারণত 40 – 60%) খাদ্য সংরক্ষক হিসেবে এটি তত বেশি কার্যকর হবে । জ্যাম, আচার, জেলিতে চিনির ঘনমাত্রা 65-70% । চিনির গাঢ় দ্রবণ অণুজীবের জন্য বিষের মত কাজ করে।
চিনি এবং খাবার লবণ দ্বারা খাদ্য সংরক্ষণের কৌশল: চিনি এবং লবণ দ্বারা কোনো খাদ্য সংরক্ষণে এরা খাদ্য থেকে মুক্ত পানি শোষণ করে দ্রবণে পরিণত করে। ফলে আর্দ্রতার অনুপস্থিতিতে খাদ্যে অণুজীব জন্মাতে বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে তাই খাদ্যের পচন ঘটে না। চিনি এবং লবণ উভয়ই ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীরে অভিস্রবনীয় (Osmotic Pressure) চাপ সৃষ্টি করে কোষ প্রাচীরের ক্ষতি করে বা ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে অণুজীবের বেঁচে থাকা বা বংশ বিস্তার কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া চিনি এবং লবণ একত্রে কাজ করে খাদ্যের স্বাদ এবং গুণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। এরা কিছু উপকারী অণুজীব সৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়। মদে ঈস্ট দ্বারা চিনি ইথানলে পরিণত হয় এবং ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া দ্বারা চিনি উপকারী জৈব এসিডে পরিণত হয়। লবণ মোল্ড এবং ঈস্টের বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। জ্যাম, জেলি, আচার, মোরব্বা, বিভিন্ন আচার এ ব্যবহৃত চিনি খাদ্য সংরক্ষক হিসেবে কাজ করে।
জলা মসলা অণুজীব ধ্বংস করতে পারে না। তবে অণুজীব ধ্বংসকারী পদার্থকে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়। বিভিন্ন মসলা জাতীয় বস্তু যেমন- হলুদ, লবঙ্গ, রসুন, সরিষার তেল, হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা পচন কাজে বাধা দেয়। সরিষার তেল ব্যাকটেরিয়াকে খাদ্যবস্তুর সংস্পর্শে আসতে দেয় না।